This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

10 Dec 2024

স্মৃতিকথন: ফ্যাসিবাদের কারাগারে

ফ্যাসিবাদের কারাগারে 
মোঃ ইউসুফ 

ফ্যাসিবাদের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জামিনের সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে যখন বাইরের কথা চিন্তা করছিলাম, তখন ভাবছিলাম কারাগার থেকে বের হয়েই কোন দিকে যাওয়া যায়। বাড্ডায় নিজের বাসায় যাব, নাকি টঙ্গীতে যাব? সময়টা তখন আনুমানিক বারোটা পার হয়ে গেছে। এর মধ্যেও ভিতরে যে সিরিয়াল ছিল, তাতে ছাড়া পেতে অনুমানিক দু'টা-তিনটা বেজে যাবে হয়তো। কারাগার থেকে বের হয়ে এই সময় নিজের বাসায় গেলে গেট যেমন বন্ধ, তেমনি টঙ্গীতে ভাইয়ের বাসায় গেলেও তাদেরকে রাত দুইটা-তিনটায় বাইরে থেকে ডেকে তুলতে পারব কি না, সে শঙ্কাও ছিল। পকেটের অবস্থাও তখন ছিল খুবই ভয়ানক, যা কিনা একজন ফকিরকে যদি দিতাম, সেও আমার দিকে আড়চোখে তাকাতো। তখন পকেটে বাংলাদেশের প্রচলিত সবচেয়ে ছোট নোটটি—দুই টাকার একটি নোট ছিল। তবে কর্তৃপক্ষের পিসিতে কিছু টাকা ছিল, ওই টাকা তুলতে পারলে অনায়াসে যাওয়া যাবে। কিন্তু তা পাবো কি না, তা নিয়েও ছিলাম সংকিত।

ঢাকা কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনে

সামনে যাওয়ার আগে চলুন একটু পিছনে যাই। রাত তখন ৮টা ৩০ মিনিট। বন্ধুর কাছ থেকে ফোন আসলো—

বন্ধু: "হ্যালো, ইউসুফ কোথায়?"

আমি: "বাসায়।"

বন্ধু: "ক্যাম্পাসের দিকে একটু আসতে পারবি? এখানে একটু ঝামেলা হয়েছে।"

আমি: "এখন এই সময় হঠাৎ?"

বন্ধু: "আসতে পারলে একটু দ্রুত আয়।"


ফোন কেটে গেল। ভাবতে শুরু করলাম, কী এমন হলো হঠাৎ করে? বলছি, ২৪ জুলাইয়ের কথা। ভাবতে ভাবতে যখন প্রায় আধা ঘণ্টা চলে গেল, আবারো ফোন আসলো—

বন্ধু: "কিরে, আসতেছিস?"

আমি: "হ্যাঁ, আধা ঘণ্টার মধ্যে আসতেছি।"

ফোন কেটে দিয়ে এক মুহূর্ত দেরি না করে রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম। তখন সেনাবাহিনীর কার্ফিও চলছে, রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই। বিকল্প উপায় না পেয়ে একটা মোটরসাইকেলে দাম না করেই উঠে গেলাম। ক্যাম্পাসের কাছেই ওয়্যারলেস গেটে নেমে আবার ফোন দিলাম—

আমি: "হ্যালো, কোথায় আছিস? আমি ওয়্যারলেস।"

জবাবে ওপার থেকে—

বন্ধু: "ক্যাম্পাসের সামনে।"


ওভার ব্রিজের নিচে আসতেই চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলল কয়েকজন। একজন জিজ্ঞেস করল, "তুই ইউসুফ?"

বললাম, "হ্যাঁ।"

হ্যাঁ বাচক শব্দ শুনেই বিজয়ের আনন্দে ঝাপটে ধরল সবাই।


টেনে হিঁচড়ে আমাকে নিয়ে আসা হলো ক্যাম্পাসের অপজিটে শাকিল চত্বরে। এতক্ষণে সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে গেল। সবকিছুই ছিল নাটকের পার্ট। কেড়ে নেওয়া হলো আমার কাছ থেকে মোবাইল। এশিয়া ব্যাংকের সিঁড়িতে বসিয়ে ৪-৫ জন একসাথে গলা চেপে ধরে ২০-৩০ জন মিলে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরলো। এবার গ্যালারি, সব ছবি দেখা হলো; মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ সব খোঁজা হলো। পাওয়া গেল আন্দোলন চলাকালীন বেশ কিছু ছবি। শুরু হলো পৈশাচিক অত্যাচার।


ধপায় ধপায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলল তাদের হিংস্রতা। চড়, থাপ্পড়, ঘুষি, লাথি, কাঠ এবং রটের বাড়ি, স্যান্ডেলের বাড়ি! পিচঢালা রাস্তা নয়তো দোকানের লো বেঞ্চে শুইয়ে! সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই। এখনো ভাবতে অবাক লাগে, তারা কীভাবে নিজেদের মানুষ বলে পরিচয় দিত। আমার নিজেকে নিয়ে দুঃখ নাই, শুধু তাদেরকে নিয়ে দুঃখ। আসলে তারা কীভাবে নিজেকে মানুষ দাবি করত। সত্য বলতে, ওই সময়টাতেও মনে মনে হাসছিলাম। কারণ আশপাশের অধিকাংশ মুখ ছিল আমার পরিচিত। তবুও তারা তাদের হিংস্রতার একটুও কমতি করেনি। এর মধ্যে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আসলো। কোনো প্রকার জিজ্ঞাসাবাদ বা আমাদের কাছ থেকে কিছু না শুনেই ওদের কথা মত তুলে নেওয়া হলো আমাদের গাড়িতে। সেখান থেকে বনানী থানা, থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। নার্স থেকে শুরু করে ডাক্তার, সবার মুখেই যেন ভয়, আতঙ্ক আর তাচ্ছিল্যের হাসি। বুঝলাম, তাদের মধ্যে মানবিকতা বলতে একটা শব্দ আজও টিকে রয়েছে। দাঁড়াতে তখন খুব কষ্ট হচ্ছিল, পুরো শরীর রক্তাক্ত। তবুও হেঁটে হেঁটেই সবকিছু। ডাক্তার সব দেখে দুইটা ইনজেকশন এবং কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। ইনজেকশনগুলো হাসপাতাল থেকে দেওয়া হলেও ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দু'দিনের ওষুধ ওই কনস্টেবল আমাদেরকে কিনে দেয়নি। 


আবার গাড়িতে তুলে আমাদের নিয়ে আসা হলো থানায়। আরো ৩-৪ জন কয়েদি তখন হাজতে তখন একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হাসছিলাম। মনের মধ্যে অবজ্ঞার হাসি। হাসছিলাম তখনও, যখন বনানী থানার দুর্গন্ধযুক্ত হাজতে কোনোভাবে পিঠটা ফ্লোরে লাগাতে গিয়ে ব্যথায় আগলে উঠছিলাম। এপাশ-ওপাশ করে কোনোভাবে পিঠটা লাগালাম। মাথাটা কোনভাবেই ফ্লোরে লাগাতে পারলাম না। মাথার নিচে হাত দিয়ে একটু শান্ত হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা। বন্ধুর মুখের দিকে তখন তাকিয়ে হাসছিলাম। আমার হাসি দেখে ওরও হাসি পেয়েছে। কিন্তু এই হাসি কিসের, আমরা জানি না তবে তাচ্ছিল্য এবং ঘৃণার হাসি নিচ্ছই।


ও আচ্ছা, বলে রাখি। নাটকের নায়ক বন্ধু ফোন দিয়ে নিয়ে গেলেও তাকে কিন্তু ধরা হয়েছিল ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার দিকে। তাকেও মারা হলো দফায় দফায়। রড, কাঠ—বাদ যায়নি কোনো কিছু। অস্ত্রের মুখেই হত্যার হুমকি দিয়ে আমাকে ফোন করতে বাধ্য করা হয়েছিল। বেচারা এত মাইর সহ্য করতে পারেনি। আমি হলে কী করতাম, জানি না।


পরের দিন, ২৫ জুলাই, সকাল এগারটার দিকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো বনানী থানা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। সেখান থেকে বিকেল চারটা-পাঁচটা নাগাদ কেরানীগঞ্জ কারাগারে। তখনো গায়ের রক্তমাখা জামা গায়ে রয়ে গেল। পুরো শরীর তখন ক্ষতবিক্ষত। এ রক্তমাখা জামা নিয়েই দু’দিন পর প্রথম এশার নামাজ আদায় করলাম রক্তমাখা অপবিত্র শরীর নিয়েই। জানি না, নামাজটা কবুল হয়েছে কিনা। তবে মন বলে, নিশ্চয়ই কবুল হয়েছে। নয়তো জালিমের মসনদ হয়তো আরও দীর্ঘায়িত হত।


গণরুমে পিঠের সাথে পিঠ লাগিয়ে কাটিয়ে দিলাম ৪৮ ঘণ্টার নির্ঘুমের পর তিন ঘণ্টা ঘুমের এক রাত। হাজার হাজার মানুষের ক্রন্দন রোল জালিমের প্রাসাদ খুব তাড়াতাড়িই ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এইতো সেদিন বরাবরের মতো দুপুরে যোহরের নামাজ পড়ে খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ কোরআন শরীফ পড়ে সবার সাথে গল্প করছিলাম, হঠাৎ শোরগোল, স্বৈরাচারের নিপাত হয়েছে। হঠাৎ করেই যেন কেঁপে উঠল পুরো কেরানীগঞ্জ কারাগার, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা ঝনঝন শব্দ যেন কাঁপছে। তখনও নিশ্চিত না হওয়ায় নিশ্চিত তথ্যের অপেক্ষায় আমরা আরেকটু অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরেই এক বিডিআর সদস্য ভাই এসে জানালেন, “সবাই আলহামদুলিল্লাহ পড়ে শুকরি আদায় করুন” সাথে সাথে অজু করে এসে একের পর এক শুকরানার দু'রাকাত নামাজ আদায় করার দৃশ্য। হয়তো সারা জীবনের তৃপ্তি। জেল জীবনের প্রাপ্তি। কত বছর পর আল্লাহর শোকর আদায় করে কান্না করেছি, মহান আল্লাহ ভালো জানেন। তবে কয়েকদিনে চোখের অশ্রুটা যেন স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। যদিও বিগত কত বছর আগে কান্না করেছি, জানি না। বিজয়ের দু-তিন দিন আগের কথা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে উঠে একসাথে আমাদের মেঘনা ৬/৫ ওয়ার্ডে থাকা এক ভাই বললেন, "এই হাসিনার আমলে এ নিয়ে ১৭/৩৫ (সঠিক সংখ্যাটা মনে নেই) বার কারাগারে এসেছি, কিন্তু এই প্রথম ইমাম সাহেবের মোনাজাতে আমার চোখে পানি এসেছে।" আল্লাহ ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না, নিপাত হল জালিমের, নিপাত হলো ১৬ বছরের স্বৈরাচার শাসনের। নিপাত হলো হাজার হাজার শহীদের রক্ত পিপাসু স্বৈরাচার শাসকগোষ্ঠীর।


বলছিলাম ৬ আগস্ট, তথা ৩৭ জুলাইয়ের কথা, বিডিআরদের কল্যাণে শিক্ষার্থী হওয়ার সুযোগে সিরিয়ালটা একটু এগিয়ে তাড়াতাড়ি সিরিয়াল আসে। তখনো বারোটা বেজে দশ মিনিট। ভাগ্য প্রসন্ন হল, পিসির টাকাটা তুলতে পেরেছিলাম। সব প্রক্রিয়া শেষ করতে করতে সাড়ে বারোটা হয়ে গেল। বের হয়ে সেই পুরনো সংকায় কোন দিকে পথ আগাবো? হয়তো সবার চোখে ঘৃণিত, আবার কারো কারো চোখে হয়তো ভালো। ১৫ দিন হয়ে গেল, এখনো পরিবারের সাথে দেখা নেই, তারা সবাই জেনেছে কিনা তাও জানা নেই। নিজেও জানি না, আজকে যে জামিন হবে। পরিবারও যে জানে না, এটাই স্বাভাবিক। সব কিছু উপরের ওয়ালার কাছে ছেড়ে দিয়ে কারাগারের ফটক থেকে মূল গেটের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। এ কয়দিনে গড়ে ওঠা বন্ধুদের কয়েকজনের সাথে পথে দেখা হয়ে গেল, সবাই যেন হনহনিয়ে গেটের দিকে যাচ্ছে। সবাই হয়তো ভাবছে তাদের প্রিয়জন বা কেউ না কেউ তাদের রিসিভ করবেন, কিন্তু কোন এক অজানা সংকায় আমাকে সে আশ্বাস দেয়নি। পথেই কয়েকজন আর্মি বসে থাকতে দেখে তাদেরকে সালাম জানালাম, তারা হাসিমুখে আমাদের স্যালুট দিলেন।


একটু আগাতে প্রিয় ভাই মুজিবুর ভাইয়ের মুখ দেখতে পাই। আনন্দে বুকটা ঝিলিক দিয়ে উঠলো। যেন কারাগারের সেই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো মুহূর্তেই আনন্দে রূপ নিল। এরপরই বন্ধু আমিরুলের মুখ দেখতে পাই, এরপর মনে হল আমার চেয়ে সুখী মানুষ পৃথিবীতে আর কে আছে। আমার জানা মতে কামরুল বেরিয়ে গিয়েছিল আনুমানিক দশটা থেকে সাড়ে দশটার দিকে, যেহেতু আমার চেয়ে দু'ঘণ্টা আগেই।


জেলখানায় বন্ধু কামরুলের সাথে একই ওয়ার্ড থাকার সুযোগ হয়নি, যদিও আমরা একই ফ্লোরে ছিলাম। মাঝে মাঝে বের হলে দেখা হতো, গল্প করতাম। বেশিরভাগ সময়ই বন্দী জীবন, তবে সেখানেও নির্যাতিতদের মধ্যে যে একটা সম্পর্ক গড়ে তোলা যাবে ভাবিনি। এমন হয়েছিল বিচ্ছিন্নের ঘটনাতেও আমরা কেঁদেছি। একদিন হয়েছিল এমনই, মাগরিবের নামাজ পড়ে যখন সবাইকে নিয়ে ইমাম মোনাজাত দিচ্ছিলেন, তখন চালানের কাগজ আসে। সেখানে আমাদের ওয়ার্ডের ইমাম হাবিব ভাইসহ মোট পাঁচজনের নাম চলে আসে। এটা দেখার পর এবার বিচ্ছেদের কান্না, সত্যিকারর্থে কান্না, যে এত সহজ, চোখের পানি যে এত সহজেই বের করা যায়, তা হয়তো তখন সেখানে না থাকলে কখনোই অনুভব করতাম না। কত অশ্রু ঝরে পড়েছে জানি না। কেন ঝরেছে তাও জানি না, তবে ঝরেছে। এ যেন বিচ্ছেদের এক গল্প। চলে গেলেন ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিয়ে আসা ব্যানে, বনানী থানা থেকে উঠার পর পরিচিত হওয়া দুজনসহ আমাদের ইমাম সাহেব, সব মোট পাঁচজন। ভয়, আতঙ্ক সবই যেন একসাথে আঁকড়ে ধরেছিল। একসাথে ওয়ার্ডে ওঠা ৩৩ জনের কখন যে কার চালানো হয়ে যায়, কারো জানা নেই। এদিকে ভিন্ন ভয়, আমাদের কেউ একজনের যদি চালান হয়ে যায়, তখন নিজেদের মনটা আরো ভেঙে যাবে। তেমনটা যেন না হয়, তাই আল্লাহর কাছে প্রচুর কান্না করতাম। কে কোথায় যাব, জানি না, কখনো মুক্তি পাবো কিনা, সেই চিন্তা তখন আর নেই। এর চেয়েও বেশি চিন্তা ছিল বিচ্ছেদ। যদি কাশেমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়, আবার নতুন পরিস্থিতি, নতুনভাবে বেড়ে ওঠা। তখন চালান থেকেও এখানেই একসাথে বছরের পর বছর থেকে যাওয়াকে পছন্দনীয় মনে হতো। সারাক্ষণ এই চিন্তাতেই আতঙ্কিত ছিলাম, ওরে আবার পাঠিয়ে দেয়। যাই হোক, আলহামদুলিল্লাহ, শেষ পর্যন্ত এমনটা হয়নি।


তার ওয়ার্ড নাম্বার ৬/৪ থাকায় তার সিরিয়াল আমার আগে ছিল। তাই এতক্ষণে সেও হয়তো কোন না কোনভাবে চলে গেছে, এটাই ভেবে নিয়েছিলাম। কিন্তু পরক্ষণেই তাকেও দেখতে পাই। এরপরেই বড় ভাইয়ের দেখা পাই, এতেই কারাগারের সব কষ্ট নিমিষেই মিলিয়ে কোথাও যেন হারিয়ে যায়, বিপরীতে ফুটে উঠে আনন্দ আর বিজয়ের তৃপ্তি। জেলখানা থেকে বেরিয়ে মিষ্টিমুখ করতে পারব, এমন স্বপ্ন তো দুঃস্বপ্নই বলা যেত। জেল হাজতে ঘুমের মধ্যে যখন এমন স্বপ্ন দেখতাম, তখন সবকিছুই দুঃস্বপ্নের মত মনে হতো। কিন্তু তাও যেন বাস্তবে রূপ নেয়। এরপর একটা সিএনজি ডেকে, সবাই মিলে বাসার দিকে ছুটে চলা, রাত তখন প্রায় ১টা...!





8 Dec 2024

Certificate of Appreciation - GTCRC Intra College Research Proposal Contest 2023

Certificate of Appreciation - GTCRC Intra College Research Proposal Contest 2023

Certificate of Appreciation


I am honored to have received a Certificate of Appreciation from the Govt. Titumir College Research Club (GTCRC) for my participation in the GTCRC Intra College Research Proposal Contest 2023, held on February 25, 2024.

The contest encouraged students to develop innovative research proposals on pressing socio-economic issues. My research proposal, titled "Tackling Inflationary Pressure through Effective Budget Allocation: A Case Study of Bangladesh National Budget 2023-24," was recognized for its creativity, critical thinking, and practical insights.

This recognition is a testament to my dedication to academic excellence and my interest in addressing real-world economic challenges. I am grateful to the GTCRC team for this opportunity and for fostering a platform that encourages young researchers to contribute to impactful solutions.

#ResearchExcellence #EconomicPolicy #AcademicAchievement #CriticalThinking

4 May 2024

প্রিয় বন্ধুর সফল হওয়ার গল্প

 

প্রিয় বন্ধুর সফল হওয়ার গল্প 


পুরো এডমিশন লাইফের সবচেয়ে কাছের বন্ধু এবং সবচেয়ে কাছের সহপাঠী প্রিয় ফরহাদ হোসেন ভাইয়ের সফলতার গল্প। যিনি সেই শুরু থেকেই আমার সাথে একসাথে পড়াশোনা করেছে। 

কিন্তু ভাগ্যের লিখনে ঢাকা ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি তে পরীক্ষা দেওয়ার কোন সুযোগই পায়নি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি (কারণ তার মেরিট পজিশন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে 8 এর কাছাকাছি ছিল) চট্টগ্রামের ভার্সিটিতে পরীক্ষা দিলেও প্রায় ৬২০০+ পজিশন আসে। আর এই পিছিয়ে পড়া পজিশন নিয়ে চট্টগ্রামের ভার্সিটিতে ভর্তির কোন সুযোগ পায়নি। সৌভাগ্যক্রমে ৭ কলেজে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। যদিও সে পরীক্ষা দিয়েছিল কিন্তু আমাকে জানায়নি পরে আমাকে জানালেও ভালো সংবাদ শুনাতে পারেনি। কারণ সাত কলেজে তার মানবিক বিভাগের প্রিপারেশন নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেওয়া লেগেছে। ফলাফল দিয়ে দাঁড়ায় ১৫৫০০+। কিন্তু এত দূর পজিশনে সাবজেক্ট পাওয়াটা ছিল সোনার হরিণের মতো। তার অনেক মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল কারণ শেষ তার সর্বশেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে ফেলতে চলেছে। আমি তাকে কিছু মৃত আশ্বাস দিয়েছিলাম। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছুই হবে। পরে সাবজেক্ট চয়েজ এর ব্যাপারে আমার পরামর্শ নিয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রথম সাবজেক্ট চয়েস দেয়। কারণ আমি জানতাম বড় কিছু আশা করলে অনেক কিছুই হারাতে হতে পারে। 

কয়েকবার মেরিট পজিশন দিয়ে দিয়েছে চূড়ান্ত মেরিট পজিশন দিয়ে দিয়েছে তারপরও প্রিয় ভাইটির সাবজেক্ট আসেনি। অবশেষে গতকাল ২৩-০৩-'২২ কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের জন্য মনোনীত হয়।

গতকাল আমি খোঁজ নিতে পারিনি তবে আজকে যখন জানতে পারলাম প্রিয় ভাইটি সাবজেক্ট পেয়েছে তখন মনে হয়েছে কিছুক্ষণ কান্না করি। কান্নাটা অবশ্যই সুখের কান্না কারন আমি আমার এডমিশন লাইফের একজন প্রিয় বন্ধুকে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা থেকে আবার পড়াশোনায় ফিরে আসার গল্পটা দেখেছি। 

প্রিয় ভাই তোমার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইলো।

28 Dec 2022

৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরামের পিছনের গল্প

৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরামের পিছনের গল্প

৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরাম আহ্বায়ক কমিটি


৭ জানুয়ারি ২০২২ অনলাইন ভিত্তিক যাত্রা শুরু হলেও মূলত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে ৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরাম। শুরুটা যদি এর মধ্যেই হতো তাহলেই হয়তো ভালোই হত। কিন্তু এখান থেকেও শুরু হয়নি। তাহলে চলুন জানা যাক শুরু হওয়ার গল্প-


মানুষের ইচ্ছেশক্তি সেই ছোটবেলা থেকেই জাগ্রত হয়ে যায়। সুতরাং বলাই যায় মায়ের কোল থেকে জ্ঞান হওয়ার পরপরই মানুষের ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নিজেকে একজন ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেওয়ার খুব ইচ্ছে জাগ্রত হয়ে যায় ঢাকা শহরে এসে আমার ভাইয়াদের যখন দেখেছি ব্যবসা করতে। সেখান থেকেই ব্যবসার প্রতি একটু বেশি মায়া জাগ্রত হয়। 

সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় হলে আমি DU Seven College Family নামে একটা গ্রুপে কাজ করা শুরু করি। কিছুদিনের মধ্যেই 7 College Network গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা নুসরাত জাহান তানহার সাথে আমার পরিচয় হয়ে যায়। ঘটনাক্রমে একদিন রাতে সে তার ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে আমাকে কিছু কথা বলে পরবর্তীতে আমিও আমার লক্ষ্য নিয়ে তাকে জানাই এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় আমরা পরস্পরের সহযোগিতার মাধ্যমে কোন কিছু করতে পারি কিনা, তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরাম এর নাম প্রস্তাবিত হয় এবং এই নামেই কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই।


আমাদের সিদ্ধান্ত যখন ০৭-০১-'২২ আমার গ্রুপ তৈরি করার মাধ্যমে বাস্তবে রূপ নেয় পরবর্তীতে আমাদের সাথে যোগ দেয় আমাদের বন্ধুপ্রতিম যায়েদ হাসান, আতিক হাসান, আফসানা মিম এর কিছুদিনের মধ্যেই ইমরান খন্দকার, আব্দুল হাকিম, মো. সবুজ আমাদের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।


প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক

পরবর্তীতে ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি'২২ শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা শিখা চিরন্তন এর পাশেই আমাদের ৭ সদস্যের উপস্থিতিতে (আব্দুল হাকিম প্রবাসী হওয়ায় সরাসরি করতে পারেননি তবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন) প্রথম প্রোগ্রামের মধ্যদিয়ে ৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরামের আনুষ্ঠানিক পদযাত্রা শুরু হয়।


সকল সদস্যদের সাথে

পরবর্তীতে ১১, মার্চ'২২ তারিখে ১৭ সদস্যর সরাসরি (৯জন অনুপস্থিত) উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সদস্য ফরম পূরণ এবং দায়িত্বশীল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংগঠন হিসেবে মাত্রা শুরু করে দেয়।


দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক


আমাদের দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বারের অনুরূপ শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ঢাকা।

কেন্দ্রীয় কমিটি

কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত সম্মানিত দায়িত্বশীল বৃন্দ।


কলেজ কমিটি-১


কলেজ কমিটি-২


৭ কলেজ এবং অন্যান্য কলেজ মিলিয়ে ৮টি শাখার দায়িত্বশীলদের তালিকা উপরে দেওয়া হলো।

দায়িত্বশীলদের পরিচিতি

কেন্দ্র থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের তালিকা উপরের চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।

এত সুন্দর করে পরিপাটি করে সাজিয়ে নেওয়ার পরও প্রচুর বাঁধা আর পিছুটান যেনো লেগেই থাকে। সবার কাছে আমাদের ৭ কলেজ উদ্যোক্তা ফোরামের প্রতি দোয়া চেয়ে বিদায় নিচ্ছি, আল্লাহ হাফেজ।


at March 25, 2022
Email ThisBlogThis!Share to TwitterShare to FacebookShare to Pinterest